272 Views
কন্টেন্ট রাইটিং এর ৯ টি কার্যকরী কৌশল
সব কিছু যখন বর্তমানে অনলাইনের দখলে তখন এই কন্টেন্ট রাইটিং বিষয়টি কারোরই অজানা নয়।কন্টেন্ট রাইটিং এমনি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় যা অনলাইনের সমস্ত জায়গায় দরকার হয়ে থাকে। তাহলে নিশ্চয় বুঝতেই পারছেন কন্টেন্ট রাইটিংয়ে দক্ষতার কদর। কিন্তু যেমন তেমন কন্টেন্ট আপনার সেবা বা পণ্যকে যেমন ডাউন করে ফেলতে পারে তেমনি আপনার কন্টেন্ট রাইটিং যদি মানসম্পন্ন বা আপনার ক্রেতা বা রিডারের মনমত না হয় তাহলে আপনার সেই কন্টেন্ট রাইটিং একেবারেই বৃথা, নিশ্চয় আপনারা কষ্ট করে সময় ও শ্রম ব্যয় করে এরকম মানের কন্টেন্ট লিখতে চান না?? তাই আপনাদের সামনে নিয়ে এসেছি ৭ টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট যা আপনার লিখাকে আত্মসম্মান ও রিডার ফ্রেন্ডলি করবে একই সাথে আপনার সেল জেনারেট করে আপনার পণ্য বা সেবাটিকে কার্যকরী করে আপনার ও আপনার কাষ্টমারের মধ্যে সু সম্পর্ক নিশ্চিত করবে। সুতরাং, চলুন আর কথা না বাড়িয়ে সেই গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চলে যাই সরাসরি-
- লক্ষ্য ও কাস্টমার ঠিক করা: যে কোন ভাল মানের কন্টেন্ট রাইটিংয়ের শুরুতে আপনাকে আপনার লক্ষ্য ঠিক করতে হবে যে, আপনার এই লিখার পেছনের সত্যিকার উদ্দেশ্যটা কি। তারপরই আপনাকে যেটা ঠিক করতে হবে আপনার কাস্টমার কারা, এবং তাদের পছন্দ ও অপছন্দ। যেমনঃ ধরুন আপনি লিখতে চান বিউটি প্রোডাক্ট নিয়ে তাহলে নিশ্চয় স্বাভাবিকভাবেই আপনার টার্গেটেড কাস্টমার হবে মেয়েরা এবং কোন ধরনের বিউটি প্রোডাক্ট অধিক মেয়েরা ব্যবহার করে বা আপনার এই লিখার উদ্দেশ্য কি তা যদি ঠিক না করে আপনি র্যান্ডমলি লিখা শুরু করেন আপনার পাঠকের মনোযোগ হারাবেন। তাই উদ্দেশ্যহীন ও কাস্টমার টার্গেটহীন লিখা আপনাকে স্পষ্টতই লক্ষ্যে পৌঁছাতে বাধা দিবে।তাই লিখা শুরুর আগে আপনি অবশ্যই উদ্দেশ্য ও কাস্টমারের প্রয়োজন এনালিশিস করবেন।
- সহজ ও সাবলীল কিন্তু সুন্দর বাক্য প্রয়োগ: আপনি যে লিখাটি লিখবেন সেটি নিশ্চয় খুব সুহজ, প্রচলিত ভাষায় হতে হবে। এমন কঠিন বাক্য এড়িয়ে চলুন যেগুলোর জন্য পাঠককে আলাদা করে ডিকশনারী খুলতে হয় সেই সব শব্দের অর্থ খুঁজতে। তার মানে এই নয় আপনি আপনার কন্টেন্ট রাইটিংয়ে আঞ্চলিক ভাষা বা অগ্রহনযোগ্য ও অকথ্য ভাষা ব্যবহার করবেন। আপনার লিখায় এটি নির্দিষ্ট করতে পারলে পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হবে সবসময়।
- লিখায় মৌলিকতা এবং নতুনত্ব থাকতে হবে: বর্তমানে একটি বিষয়ের উপর হাজার হাজার আর্টিকেল দেখা যায়, ভেবে দেখুন তো আপনার কন্টেন্টে নতুন কোন তথ্য বা ব্যতিক্রম কিছু না থাকলে পাঠক তা কেন পড়বে? তাই আপনার রাইটিংটিংয়ে মৌলিকতা এবং নতুনত্ব থাকা প্রয়োজন। নতুন তথ্য অথবা ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির জন্য পাঠকেরা আপনার লেখা পড়তে ইচ্ছুক হবে।
- আকর্ষণীয় টাইটেল তৈরীঃ আপনার কন্টেন্ট বা আর্টিকেলের টাইটেলটি অবশ্যই প্রচন্ডরকম আকর্ষণীয় বা শক্তিশালী হতে হবে যেন মানুষের টাইট পড়েই মনে হয় যে, সে একদম এটাই খুঁজছিল বা টাইট দেখেই পড়তে মন চাইবে এমন। পুরো আর্টিকেল সব থেকে কঠিন কাজ হচ্ছে টাইট এবং ভূমিকা ঠিক করা। আপনার লিখার বিষয়বস্তু কি হবে তা মাত্র কয়টি ওয়ার্ডে সীমাবদ্ধ করা বা মানুষকে বুঝানো কিন্তু কোন ভাবেই সহজ নয়। তাই আপনার লিখার টাইটেল বা শিরোনাম ঠিক করুন সময় নিয়ে ও চিন্তা ভাবনা করে ।
- মূল লক্ষ্য থেকে লক্ষ্যচুত না হওয়াঃ আপনার কন্টেন্টের টাইটেলের উপর আপনার আর্টিকেলের ভূমিকা কেমন হবে তা সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। খুব এংগেজিং টাইটেল দেখিয়ে আপনার পাঠককে যেমন আপনার লিখাটি পড়তে বা লিখাটি ওপেন করতে বাধ্য করবেন, ঠিক একইভাবে আপনার কন্টেন্ট বা আর্টিকেলের ভূমিকার উপরই নির্ভর করে পাঠক এটি পড়বে কি পড়বেনা।আবার একই ভাবে ভূমিকা বা টাইটেলের সাথে আপনার আর্টিকেলের বডিও পুরোপুরি নির্ভরশীল। আপনি কোনভাবেই আপনার বিষয়বস্তু থেকে দূরে সরে যেতে পারেন না, যদি আপনার লিখায় আপনার বিষয়বস্তু কোনভাবে ডিসট্র্যাক্ট হয় তাহলে নিশ্চিত আপনার পাঠকও ডিসট্র্যাক্ট হয়ে আপনার লিখাটি থেকে বের হয়ে যাবে। যেমনঃ আপনাকে আপনার সম্পর্কে লিখতে বলা হয়েছে, লিখার প্রয়োজনে আপনি আপনার নাম, পেশা, যোগ্যতা লিখার পাশাপাশি আপনার বাবার নাম বললেন এবং তারপরেই শুরু হয়ে গেল আপনার বাবার নাম, যোগ্যতা, পেশা, প্রভাব বা উনার বাপ দাদার বংশ পরিচয় ইত্যাদি। মূল বিষয়বস্তুর মধ্যে এগুলা ড্রেসট্রয়ার বা ধ্বংসকারী নামে পরিচিত। তাই আপনার উচিত লিখার বিষয়বস্তুর সাথে কঠিনভাবে স্থির থাকা কোনভাবেই লক্ষ্যচ্যুত না হওয়া।
- লিখায় বিষেশন ব্যাবহারঃ যে লিখায় যত বেশি বিশেষণের ব্যবহার সেই লিখা তত বেশি শক্তিশালী বা প্রতিপত্তি সম্পন্ন। লিখায় বিশেষণের ব্যবহার অহংকারের মত কাজ করে। তাই লিখায় সুন্দর ও পাওয়ারফুল বিশেষণ ব্যবহার পাঠককে মুগ্ধতা দান করে । যেমনঃ যখন আমরা বলি ছেলেটি খুবই মেধাবী, চিন্তা করে দেখেন এতগুলি ওয়ার্ডের মধ্যে একমাত্র মেধাবী শব্দটি ফোকাস হয় বা আমাদের মনে একটি ইমেজ তৈরি করে।
- লিখাকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করাঃ ছোট ছোট অংশে ভাগকৃত লিখায় মানুষের বিরক্তি আসেনা, পাঠক পরবর্তী লিখা পড়তে আগ্রহী হয়। তাই পাঠকের আগ্রহ ধরে রাখতে এবং পড়ার সুবিদার্থে লিখাকে যতটা ছোট অংশে ভাগ করা যায় ততই ভাল। আবার লিখার ধরন অনুযায়ী সেটা বুলেট পয়েন্ট বা নাম্বারিং করে লিখলেও পাঠকের কাছে তা সহজবোধ্য হয়।
- উদাহরন হিসেবে বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতাকে আনাঃ আপনার লিখা তথ্যবহুল হলেও সেখানে উদাহরণ হিসেবে বাস্তব জীবনের গল্প বা অভিজ্ঞতা না থাকলে সেটি রুক্ষ দেখায়। অন্যদিকে উদাহরণ হিসেবে বাস্তব অভিজ্ঞতার প্রয়োগ আপনার লিখাকে রসালো বানায় এবং পাঠককে আনন্দ দেয়।
- প্রুফরিডিং এবং এডিটিং: আপনার লিখা বা রাইটিং প্রকাশ করার আগে সর্বদা আপনার কন্টেন্ট প্রুফরিড করুন এটা নিশ্চিত করতে যে এটি ব্যাকরণগত ত্রুটি, বানান ভুল এবং অস্পষ্ট বাক্যাংশ থেকে মুক্ত কিনা। এটা আপনার লিখার সর্বশেষ ধাপ হলেও, আপনার লিখাকে পেশাদার এবং সৌন্দর্যমন্ডিত করতে এটির বিকল্প নেই বা গুরুত্বের দিক থেকে কোন অংশেই কম না।